রাজধানীর তুরাগ থানাধীন বাউনিয়া বাজার এলাকার ভূমিদস্য, সন্ত্রাসী খোরশেদ মাদবর ও তার ৩ ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার নিরীহ মানুষ। এ ভূমি দস্যু পরিবারের খুটির জোর কোথায়?
সরেজমিন ঘুরে জানাযায়, নিজেদের ভিটে বাড়ি ও চাষাবাদের জমি হারিয়ে নিঃস্ব অনেক পরিবার ভয়ে মুখ খুলেননি এতদিন। মজিবুর রহমান নামে এক ব্যক্তি জানায়,তার ৩১ শতাংশ পারিবারিক সম্পত্তি লিজ নিয়েছিল খোরশেদ মাদবর। সেই জমির কাগজপত্র সৃজন করে জমি নিজের বলে পরবর্তীতে দাবি করেন।
জমির প্রকৃত মালিক মজিবুর রহমান বিষয়টি নিয়ে এসিল্যান্ট অফিসে মামলা করলে রায় তার পক্ষে আসে। নাছোড় বান্দা ভূমি খেকো খোরশেদ মাদবর জমির দখল ছাড়তে নারাজ। গত,৩১-১-২০০২৫ তারিখে মজিবুর তার নিজ জমিতে গেলে খোরশেদ মাদবর তার ৩ ছেলেকে সাথে নিয়ে তাদের ক্যাডার বাহিনী মারার জন্য তেরে আসে ও হুমকি ধামকি দেয় এবং কখনোই যেন এই জমির ত্রিসীমানায় না আসে সেই বিষয়টিও সতর্ক করে দেওয়া হয়।
প্রাণ ভয়ে মজিবুর রহমান বিষয়টি তুরাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।ডায়েরি নং-৭৩৮, তাং-১৩-০১-২০২৫ ইং।
এলাকাবাসী জানায়,খোরশেদ মাদবর ও তার পুরো পরিবার আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন।পুরো বাউনিয়া এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল তারা।বিচার সালিশ থেকে শুরু করে সবকিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তাদের উপরে কথা বলার মত কেউ ছিল না। কেউ মুখ খুলে কিছু বলতে চাইলে অস্ত্রের ভয় দেখাত খোরশেদ মাদবর সহ তার ছেলেরা।
বাউনিয়া বাজার কমিটির সভাপতি সাজ্জাদ আলম খোরশেদ মাদবরের বড় ছেলে।৫ই আগস্ট এর আগে এই কমিটি চলত আওয়ামী লীগের ব্যনারে আর এখন ভোল পাল্টে চলছে বিএনপি’র ব্যনারে। প্রতিদিন সাজ্জাদ আলমের নেতৃত্বে বাজার থেকে চাঁদা উঠে ২০/২৫ হাজার টাকা।এবং টেম্পু স্টান্ড থেকে চাঁদা উঠে ১০ হাজার টাকা।খোরশেদ মাদবরের রাজনৈতিক পরিচয়,সহ-সভাপতি তুরাগ থানা আওয়ামীলীগ। বড় ছেলে,সাজ্জাদ আলমআহবায়ক সদস্য, তুরাগ থানা যুবলীগ। দ্বিতীয় ছেলে,শাহেদ আলমসহ-সাংগঠনিক সম্পাদক,তুরাগ থানা যুবলীগ। তৃতীয় ছেলে,রনি হাসান,আহবায়ক সদস্য, তুরাগ থানা যুবলীগ।
গত ১৭ বছরে অবৈধ ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিনা ভোটের নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনের এমপি হাবিব হাসান, আমির খরশু মাহমুদ ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহেরা খাতুনের খুব আস্থাভাজন ও কাছের মানুষ ছিলেন এই ভুমি দস্যু মাদবর পরিবার। তাদের এই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বাউনিয়া বাজারসহ আশেপাশের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বিঘা জমি এখনো অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের অনেকেই মৃত্যুর ভয়ে নিজের পৈত্তক সম্পত্তির কাছে আসতে সাহস পায়না।
আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির জমি জোরপূর্বক দখল করে নেয় এই ভূমি খেকো পরিবার। তাতে প্রতিবাদ করায় আলাউদ্দিনকে তার দোকান ঘরের ভিতর থেকে টেনেহেছরে বের করে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে,মাদবরের নির্দেশে তার তিন ছেলে। আলাউদ্দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান সেই মৃত্যুকে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে স্টক করে মারা গেছেন বলে চালিয়ে দেন। আজও আলাউদ্দিনের পরিবার একমাত্র উপার্জন ক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা। তুরাগ থানা মামলা নং-১০ তারিখ ১১-৪-২০২২।
একই কায়দায় অন্যের জমি দখল করার কারণে আরেকটি মামলা হয়। খোরশেদ মাদবরের পরিবারের নামে মামলার বাদী আবুল কাশেম চৌধুরী সিআর মামলা নং ১৯৪/২০২২।
সর্বশেষ পতিত স্বৈরাচার সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর গণহত্যার দায়ে খোরশেদ মাদবর তার ৩ ছেলে শাহেদ আলম, রনি হাসান ও সাজ্জদ আলমের নামে হত্যা মামলা হয়। এই মামলায় শাহেদ আলম কারাগারে থাকলে ও খোরশেদ মাদবর ও তার ২ ছেলে রনি হাসান,সাজ্জাদ আলম এখনো বুক ফুলিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
তবুও থেমে নেই বাউনিয়া বাজার ও টেম্পু স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজির কার্যক্রম। উত্তর পশ্চিম থানা মামলা নং-০৮, ইং- ০৩-০১-২০২৫।১৪১/১৪২/১৪৩/১৪৪ নং আসামি তারা।এলাকাবাসী এই ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেতে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন। ঢাকা-শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২