দৈনিক পূর্বাচল রিপোর্ট : বাংলাদেশকে নিয়ে নানা চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেকেই চায় না আমাদের দেশটি এগিয়ে যাক।
এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্রান্তের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যাদের উস্কানিতে বিএনপি আজ লাফাচ্ছে, তারা কিন্তু তাদের ক্ষমতায় বসাবে না। তারা শুধু তাদেরকে ব্যবহার করবে।
সোমবার দুপুরে গণভবনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বাদে অন্য কেউ ক্ষমতা আসলে উন্নয়ন এবং দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। দেশবিরোধী, খুনি, মৌলবাদী চক্র, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয় জনগণের জীবন-মান উন্নত হয়, সেটা আমরা প্রমাণ করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশে এগিয়ে যাচ্ছে। বিদেশে বাংলাদেশের সম্মান মর্যাদা বেড়েছে অনেক।
‘২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত যে পরিবর্তনটা দৃশ্যমান হয়েছে আওয়ামী লীগ ধারাবাহিকভাবে ক্ষমতা আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মানুষের মন জয় করেই ক্ষমতায় এসেছি ।আর ক্ষমতায় এসে ধারাবাহিক উন্নয়ন করে যাচ্ছি । আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর ৭৫ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত যে অন্যায় অত্যাচার করা হয়েছে, আমরা তার প্রতিশোধ নেই নাই। আমরা অন্যায়ের জবাব দিচ্ছি উন্নয়ন করে।’
বর্তমান সরকার প্রতিটি জেলায় পরিকল্পিত উন্নয়ন করছে মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ফলে আজ গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা একেবারে নাই বললেই চলে। সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে না পারলে, গত সাড়ে চৌদ্দ বছরে আমরা যে উন্নয়ন করেছি, তার সবকিছুই ধ্বংস হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগ সরকার যে উন্নয়ন করেছে সেগুলো বেশি করে প্রচার করতে দলীয় নেতা কর্মীদের নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি । একই সাথে উন্নয়ন যেন অব্যাহত থাকে এবং আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনা দরকার সেটাও মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি মানুষের আস্থা বিশ্বাস ও অর্জন করতে হবে।
সামনে জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত দলকে আরো শক্তিশালী, সু সংগঠিত করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ প্রদান করেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি দলে দুঃসময়ের নেতাকর্মীরা যেন অবহেলিত না হয় সে বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে নেতাদেরকে নির্দেশ দেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, দুঃসময়ের নেতাকর্মীরাই দলের দুঃসময়ে এবং যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকবে। আমার একমাত্র শক্তি আমার সংগঠন। সাংগঠনিক শক্তি না থাকলে বড় কোন অর্জন সম্ভব হয় না। তাই দলকে সুসংগঠিত করতে হবে তৃণমূল পর্যায়ে থেকে।
এসময় ঢাকা ১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে সকলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরাফাতকে আপনাদের হাতে তুলে দিলাম। নৌকার বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে সকলে মিলে কাজ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির নির্বাচন মানে দশটা হোন্ডা, ২০টা গুণ্ডা, নির্বাচন ঠাণ্ডা। আওয়ামী লীগ কখনো ভোটারবিহীন নির্বাচন করেনি। ভোটারবিহীন নির্বাচন করেছে খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।